Saturday, September 7, 2013

মানিকগঞ্জের বালিয়াটি প্রাসাদ,ঘুরে দেখে আসুন


ঢাকার অদূরের একটি জেলা মানিকগঞ্জ। এর প্রতিটি উপজেলায়ই কমবেশি রয়েছে নানা ঐতিহাসিক নিদর্শন। এসবের মধ্যে অনেকের পরিচিত বালিয়াটি প্রাসাদের দৃষ্টিনন্দন নির্মাণশৈলী সহজেই দর্শনার্থীদের মন কাড়ে।মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি জমিদারবাড়িঢাকা থেকে প্রায় পঞ্চাশ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম দিকে এবং মানিকগঞ্জ জেলা শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার পূর্ব দিকে
ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বেশ কিছু সুরম্য প্রাচীন স্থাপনাঅনেক দূর থেকেএখনও দালানগুলোর চূড়া মন কাড়ে আগতদেরসময়ের ব্যবধানে ভবনগুলো ধ্বংসের প্রহর গুনলেও আজও ঠায় দাঁড়িয়ে জানান দেয়া বালিয়াটির জমিদারদের সেকালের সেই বিত্ত আর বৈভবের কথাবালিয়াটি জমিদারবাড়ি বালিয়াটির জমিদাররা আঠারো শতকের প্রথম ভাগ থেকে বিশ শতকের প্রথমভাগপ্রায় দুইশ বছরের এ দীর্ঘ সময়টাতে বালিয়াটির জমিদারদের সুখ্যাতি ছিল বিস্তরএ সময়ে তারা নানা রকম গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা তৈরি করেন এ এলাকায়বালিয়াটি জমিদারবাড়ি সেগুলোর অন্যতমজানা যায়, আঠারো শতকের মধ্যভাগে জনৈক লবণ ব্যবসায়ী জমিদার গোবিন্দরাম শাহ বালিয়াটি জমিদারবাড়ি নির্মাণ করেনআর ক্রমান্বয়ে তার উত্তরাধিকারীরা এখানে নির্মাণ করেন আরো বেশ কিছু স্থাপনাএখানে পূর্ববাড়ি, পশ্চিমবাড়ি, উত্তরবাড়ি, মধ্যবাড়ি এবং গোলাবাড়ি নামে বড় আকারের পাঁচটি ভবনজমিদারবাড়ির এই বিভিন্ন অংশ বালিয়াটি জমিদার পরিবারের উত্তরাধিকারীরাই তৈরি করেন বলে জানা যায়মূল প্রাসাদ কমপ্লেক্সটির একই রকম পাঁচটি অংশ আলাদাভাবে নির্মাণ করা হয়েছিলপূর্ব দিকের একটি অংশ পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেলেও বাকি চারটি টিকে আছে এখনওমূল ভবনগুলোর সামনের দেয়ালজুড়ে নানা রকম কারুকাজ  মূর্তি চোখে পড়ে 
 বালিয়াটি জমিদারবাড়ির বিশাল কমপ্লেক্সটি উঁচু দেয়ালে ঘেরাপ্রাচীন আমলের সেই প্রাচীর এখনও টিকে আছেএ চার দেয়ালের মাঝে এখন রয়েছে চারটি সুদৃশ্য ভবনআর ভবনগুলোর সামনের প্রাচীর দেয়ালে রয়েছে চারটি প্রবেশ পথআর চারটি ভবনের পেছন দিকে আছে আরো চারটি ভবনচারটি প্রবেশ পথের চূড়ায় রয়েছে পাথরের তৈরি চারটি সিংহমূর্তিসিংহ দরজা পেরিয়ে বাইরে বেরোলেই দীর্ঘ পুকুরপুকুরের জলে বালিয়াটি প্রাসাদের প্রতিচ্ছবি আজো মন ভরে দেয় সবার বালিয়াটি জমিদার বাড়ি মূলত পাঁচটি মহলে প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমানে টিকে আছে প্রায় একই রকম চারটি মহলআর এ চারটি মহলের মাঝের দুটি দোতলা আর দু পাশের দুটি তিন তলাপ্রায় বিশ একরেরও বেশি জমির উপরে নির্মিত এ জমিদারবাড়িতে রয়েছে ছোট-বড় দুশোর বেশি কক্ষপেছনের দিকে আছে বড় একটি পুকুরশান বাঁধানো ছয়টি ঘাট আছে এ পুকুরের চার পাশেপুকুরের চারপাশের সারিবদ্ধ কক্ষগুলো ছিল পরিচারক, প্রহরী ও অন্যান্য কর্মচারীদের থাকার জন্যবর্তমানে বালিয়াটি জমিদারবাড়ির অবস্থা খুবই করুণসংস্কারের অভাবে দিন দিন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে মূল্যবান এই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনটিবর্তমানে জমিদারবাড়ির ভবনগুলোতে বালিয়াটি কলেজ, ভূমি অফিসের কার্যক্রমএ ছাড়া পেছনের দিকে পুরো বাড়িটিই রয়েছে নানাজনের দখলে

কিভাবে যাবেন  বালিয়াটি জমিদার বাড়িঃ

ঢাকার গাবতলী বাস স্ট্যান্ড থেকে সরাসরি সাটুরিয়ার বাস এস বি লিঙ্ক,ভাড়া ৬০ টাকা অথবা জনসেবাবাসভাড়া ৪০-৫০ টাকাএ ছাড়া যেকোনো জায়গা থেকে ঢাকা আরিচা মহাসড়কের কালামপুর স্টেশনে এসে সেখান থেকেও লোকাল বাসে সাটুরিয়া আসতে পারেন আবার মানিকগঞ্জ বাস স্ট্যান্ড থেকে এখন সি এন জির সুব্যবস্থা আছে ।সাটুরিয়া স্টেশন থেকে বালিয়াটি জমিদারবাড়ির রিকশা ভাড়া ২০-৩০ টাকা
যদি আপনি এখানে এক দিন বা দুই দিন থাকতে চান তাহলে কোথায় থাকবেনঃ
ঢাকা থেকে দিনে দিনেই বেরিয়ে আসা যায় মানিকগঞ্জ। আর থাকার জন্য ভালো মানের কোন হোটেলও নেই এখানে। একান্ত জরুরি থাকতে হলে সাধারণ মানের দুএকটি হোটেলের ঠিকানা হেয়া হলো। শহরের শহীদ রফিক সড়কে হোটেল, মানিকগঞ্জ আবাসিক বোর্ডিং


 পরবর্তীতে বালিয়াটি জমিদার বাড়ির দৃশ্যপট তুলে ধরার চেষ্টা করব। ভাল থাকুন।আজ এই পর্যন্তই।
পোষ্টটি ভাল লাগলে লাইক দিয়েন
পোষ্টটি ভাল লাগলে লাইক দিয়েন

Unknown

Author & Editor

Has laoreet percipitur ad. Vide interesset in mei, no his legimus verterem. Et nostrum imperdiet appellantur usu, mnesarchum referrentur id vim.

0 comments:

Post a Comment

0

ঢাকার অদূরের একটি জেলা মানিকগঞ্জ। এর প্রতিটি উপজেলায়ই কমবেশি রয়েছে নানা ঐতিহাসিক নিদর্শন। এসবের মধ্যে অনেকের পরিচিত বালিয়াটি প্রাসাদের দৃষ্টিনন্দন নির্মাণশৈলী সহজেই দর্শনার্থীদের মন কাড়ে।মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি জমিদারবাড়িঢাকা থেকে প্রায় পঞ্চাশ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম দিকে এবং মানিকগঞ্জ জেলা শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার পূর্ব দিকে
ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বেশ কিছু সুরম্য প্রাচীন স্থাপনাঅনেক দূর থেকেএখনও দালানগুলোর চূড়া মন কাড়ে আগতদেরসময়ের ব্যবধানে ভবনগুলো ধ্বংসের প্রহর গুনলেও আজও ঠায় দাঁড়িয়ে জানান দেয়া বালিয়াটির জমিদারদের সেকালের সেই বিত্ত আর বৈভবের কথাবালিয়াটি জমিদারবাড়ি বালিয়াটির জমিদাররা আঠারো শতকের প্রথম ভাগ থেকে বিশ শতকের প্রথমভাগপ্রায় দুইশ বছরের এ দীর্ঘ সময়টাতে বালিয়াটির জমিদারদের সুখ্যাতি ছিল বিস্তরএ সময়ে তারা নানা রকম গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা তৈরি করেন এ এলাকায়বালিয়াটি জমিদারবাড়ি সেগুলোর অন্যতমজানা যায়, আঠারো শতকের মধ্যভাগে জনৈক লবণ ব্যবসায়ী জমিদার গোবিন্দরাম শাহ বালিয়াটি জমিদারবাড়ি নির্মাণ করেনআর ক্রমান্বয়ে তার উত্তরাধিকারীরা এখানে নির্মাণ করেন আরো বেশ কিছু স্থাপনাএখানে পূর্ববাড়ি, পশ্চিমবাড়ি, উত্তরবাড়ি, মধ্যবাড়ি এবং গোলাবাড়ি নামে বড় আকারের পাঁচটি ভবনজমিদারবাড়ির এই বিভিন্ন অংশ বালিয়াটি জমিদার পরিবারের উত্তরাধিকারীরাই তৈরি করেন বলে জানা যায়মূল প্রাসাদ কমপ্লেক্সটির একই রকম পাঁচটি অংশ আলাদাভাবে নির্মাণ করা হয়েছিলপূর্ব দিকের একটি অংশ পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেলেও বাকি চারটি টিকে আছে এখনওমূল ভবনগুলোর সামনের দেয়ালজুড়ে নানা রকম কারুকাজ  মূর্তি চোখে পড়ে 
 বালিয়াটি জমিদারবাড়ির বিশাল কমপ্লেক্সটি উঁচু দেয়ালে ঘেরাপ্রাচীন আমলের সেই প্রাচীর এখনও টিকে আছেএ চার দেয়ালের মাঝে এখন রয়েছে চারটি সুদৃশ্য ভবনআর ভবনগুলোর সামনের প্রাচীর দেয়ালে রয়েছে চারটি প্রবেশ পথআর চারটি ভবনের পেছন দিকে আছে আরো চারটি ভবনচারটি প্রবেশ পথের চূড়ায় রয়েছে পাথরের তৈরি চারটি সিংহমূর্তিসিংহ দরজা পেরিয়ে বাইরে বেরোলেই দীর্ঘ পুকুরপুকুরের জলে বালিয়াটি প্রাসাদের প্রতিচ্ছবি আজো মন ভরে দেয় সবার বালিয়াটি জমিদার বাড়ি মূলত পাঁচটি মহলে প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমানে টিকে আছে প্রায় একই রকম চারটি মহলআর এ চারটি মহলের মাঝের দুটি দোতলা আর দু পাশের দুটি তিন তলাপ্রায় বিশ একরেরও বেশি জমির উপরে নির্মিত এ জমিদারবাড়িতে রয়েছে ছোট-বড় দুশোর বেশি কক্ষপেছনের দিকে আছে বড় একটি পুকুরশান বাঁধানো ছয়টি ঘাট আছে এ পুকুরের চার পাশেপুকুরের চারপাশের সারিবদ্ধ কক্ষগুলো ছিল পরিচারক, প্রহরী ও অন্যান্য কর্মচারীদের থাকার জন্যবর্তমানে বালিয়াটি জমিদারবাড়ির অবস্থা খুবই করুণসংস্কারের অভাবে দিন দিন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে মূল্যবান এই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনটিবর্তমানে জমিদারবাড়ির ভবনগুলোতে বালিয়াটি কলেজ, ভূমি অফিসের কার্যক্রমএ ছাড়া পেছনের দিকে পুরো বাড়িটিই রয়েছে নানাজনের দখলে

কিভাবে যাবেন  বালিয়াটি জমিদার বাড়িঃ

ঢাকার গাবতলী বাস স্ট্যান্ড থেকে সরাসরি সাটুরিয়ার বাস এস বি লিঙ্ক,ভাড়া ৬০ টাকা অথবা জনসেবাবাসভাড়া ৪০-৫০ টাকাএ ছাড়া যেকোনো জায়গা থেকে ঢাকা আরিচা মহাসড়কের কালামপুর স্টেশনে এসে সেখান থেকেও লোকাল বাসে সাটুরিয়া আসতে পারেন আবার মানিকগঞ্জ বাস স্ট্যান্ড থেকে এখন সি এন জির সুব্যবস্থা আছে ।সাটুরিয়া স্টেশন থেকে বালিয়াটি জমিদারবাড়ির রিকশা ভাড়া ২০-৩০ টাকা
যদি আপনি এখানে এক দিন বা দুই দিন থাকতে চান তাহলে কোথায় থাকবেনঃ
ঢাকা থেকে দিনে দিনেই বেরিয়ে আসা যায় মানিকগঞ্জ। আর থাকার জন্য ভালো মানের কোন হোটেলও নেই এখানে। একান্ত জরুরি থাকতে হলে সাধারণ মানের দুএকটি হোটেলের ঠিকানা হেয়া হলো। শহরের শহীদ রফিক সড়কে হোটেল, মানিকগঞ্জ আবাসিক বোর্ডিং


 পরবর্তীতে বালিয়াটি জমিদার বাড়ির দৃশ্যপট তুলে ধরার চেষ্টা করব। ভাল থাকুন।আজ এই পর্যন্তই।
পোষ্টটি ভাল লাগলে লাইক দিয়েন
পোষ্টটি ভাল লাগলে লাইক দিয়েন

Post a Comment

Dear readers, after reading the Content please ask for advice and to provide constructive feedback Please Write Relevant Comment with Polite Language.Your comments inspired me to continue blogging. Your opinion much more valuable to me. Thank you.

 
biz.